,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছেলের অত্যাচারে থানায় বাবা-মা

জেলা সংবাদদাতা: বখাটে ছেলের অত্যাচারে টিকতে না পেরে থানায় গিয়ে ছেলের নামে অভিযোগ করেছেন অসহায় বাবা-মা। বৃদ্ধ বয়সে যেখানে সন্তানের উপর নির্ভর করে পরম নিশ্চিন্তে থাকবেন, সেখানে বাড়িতেই টিকতে পারছেন না। উপরন্তু ছেলের হাতে মার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় বুধন্তী ইউনিয়নের খাতাবাড়ি গ্রামের ঘটনা এটি। খাতাবাড়ি গ্রামের বৃদ্ধ নূর মিয়া ও তার স্ত্রী আনোয়ারা ছেলের হাতে লাঞ্ছিত হয়ে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন। গ্রাম‌্য শালিসে বিচার না পেয়ে অবশেষে নিরাপত্তা খুঁজতে তারা বিজয়নগর থানায় হাজির হয়েছেন।

ছেলের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার একটি মামলা দায়ের করেছেন অসহায় এই বাবা-মা। মামলার এজাহার সূত্রে যানা যায়, নূর মিয়ার পাঁচ ছেলে। এদের মধ্যে বাড়িতে থাকেন তিন ছেলে। অপর দু’জন অন‌্যত্র থাকেন। তবে এই পাঁচ ছেলের কেউই বাবা-মায়ের দায়িত্ব নিতে চান না।

ছেলেদের মধ‌্যে চতুর্থ হলেন আনু মিয়া। এই আনু মিয়া প্রায়ই নেশাগ্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে বাবা-মায়ের ‍ওপর নির্যাতন চালান। কয়েকদিন আগে আনু মিয়া নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাবা নূর মিয়াকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। রক্ত বন্ধ করতে মাথায় তিনটি সেলাই দিতে হয়। মাকেও ছাড় দেননি আনু মিয়া। স্বামীকে বাঁচাতে গেলে মা আনোয়ারাকেও জোরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন তিনি। এতে কোমরে প্রচণ্ড ব‌্যাথা পান বৃদ্ধা মা।

ছেলের অত‌্যাচার সইতে না পেরে বিচার চেয়ে সমাজপতিদের দ্বারস্থ হন তারা। কিন্তু সেখান থেকে কোনো বিচার পাননি। উপরন্তু ছেলের অত‌্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেছে। এ কারণে আইনের সাহয‌্য নিয়েছেন ওই দম্পতি।

নূর মিয়া বলেন, ‘আমি এক অভাগা বাবা। ছেলের অত্যাচারে ঘর ছাড়া। কিছুদিন আগে আমার ছেলে আনু আমার বুকের উপরে উঠে দা দিয়ে জবাই করার চেষ্টা করে। এলাকার মানুষ আমারে বাঁচাইছে।’

নূর মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘ছেলে মা-বাবাকে মারে, অত্যাচার করে। আমাকেও কিছুদিন আগে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল। এখনো কোমরে ব্যথা করে। ছেলের ভয়ে পুলিশের কাছে আসছি, এখন পুলিশ যদি আমাদের রক্ষা করে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘গত বুধবার বিজয়নগরের ইউএনও মেহের নিগার ম‌্যাডামের কাছে অভিযোগ নিয়ে যাই। তিনি আমাকে থানার ওসির কাছে পাঠান। ওসি সাহেব না থাকায় বৃহস্পতিবার থানায় অভিযোগটি জমা দেই। ‘

বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ ফয়জুল আজিম নোমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযোগটি পেয়েছি। এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বর্তমানে ওই অসহায় বৃদ্ধ বাবা-মা বাড়ির পাশে বাংলা টিভির স্থানীয় প্রতিনিধি শামছুল ইসলাম লিটনের বাসায় অবস্থান করছেন।

এই বিভাগের আরও খবর